WELCOME TO AZMIR'S BLOG

Thank you for visiting my Blog! If you have any comments or suggestions relating to the posts or contents of this Blog, you are most welcome to do so by using 'post a comment' section below every post. You can also simply rate a post by clicking either 'funny', 'interesting' or 'cool' box. Personally I believe in 'the Hegelian Dialectic', and I strongly advocate for free speech and open discussion. Here I am trying to have a meaningful and productive dialogue with you. Your every piece of advice helps me to improve the Blog!
Cheers Azmir !

Monday, May 7, 2012

স্মৃতিচারণঃ এক রজনীর

স্মৃতিচারণঃ এক রজনীর

মানুষের জীবনে কত স্মৃতিই না থাকে। সব কিছু কি সবসময় শেয়ার করে সে? কোনটা আনন্দের, কোনটা বেদনার, আবার কোনটা হয় আতংকের। তবে শ্রেণীবিভাগ যেভাবেই করি না কেন, অবশেষে একসময় তা আর শ্রেণীবিভাগ মানেনা। হয়ে যায় যেন অভিজ্ঞতার এক দ্রবণ। সেটা শেষ পর্যন্ত একরকম আনন্দদায়কই হয়।

আজ আমার মনে পড়ছে একটি বেশ আতংকের রজনীর কথা। তখন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষে পড়ি। হলে উঠেছি তখন বছর খানেক হয়। হলের একটি রুমে সাধারণতঃ দু’টো বেড থাকে। আমার রুমেও তাই। বিশ্ববিদ্যালয়ে তখন খুব সম্ভবতঃ কোন এক স্বল্পকালীন ছুটি। নতুন রুমমেট। সিট পেয়ে অল্প কিছুদিন হলো এ রুমে উঠেছে। আজ অনেক কষ্ট করে তার ডাকনামটা মনে করতে পেরেছি। বাচ্চু। আমার থেকে জুনিয়র। বাচ্চু চেহারা দেখতে বেশ বলিষ্ঠ মারদাঙ্গা টাইপের হলেও প্রথম কয়েকদিনেই আবিষ্কার করলাম সে অসম্ভব ঠান্ডা, ধীরে হাঁটে, শব্দ হয়না, কথা বলে একদম কম। নিজের ডেস্কে বসে বই খুলে নাক ফুলিয়ে কি যেন ভাবে? বাড়ীর কথা হয়তঃ। দেখে মনে হয় বেশ গরীব ঘরের ছেলে। বাচ্চু ঘর-টানা ছেলে, কাজেই একদিনের জন্যও ভার্সিটি বন্ধ হলে সে শহরগামী ৩.২০ এর শাটল ট্রেন ধরবে। চল-চল বাড়ী চল। কাজেই যে রজনীর কথা বলছি সেদিন রুমে আমি একা। বাচ্চু বাড়ী গেছে।

রাত আড়াইটা কি তিনটা হতে পারে। বেশ রাত করেই আমার ঘুম আসে। ছুটি টুটি থাকলে তো কথাই নেই। কানের কাছে মৃদু বাজতে থাকা টেপ রেকর্ডারটা কখন যে থেমে গেছে জানিনা। ঘুমিয়ে পড়েছি মাত্র। ষষ্ঠ কি সপ্তম ইন্দ্রীয়ের তাড়নায় তা জানিনা, সদ্যপ্রাপ্ত ঘুমখানা একদমই হঠাত্‌ ভেঙ্গে গেল। কোনো শব্দ নেই, কিচ্ছু নেই। কিন্তু বুঝতে পারলাম রুমের ভিতর কি যেন একটা আছে। বুঝতে পারছি না। শুধু চোখের কোণ দিয়ে বালিশের উপর মাথা রাখা রেখে এবং মাথাটাকে একবিন্দুও না ঘুরিয়ে দেখতে পারলাম বিপরীত দিকের দেয়ালে কি যেন একটা দাঁড়িয়ে আছে। ভাবছি এটা কি? শরীরের লোমগুলো সব ইতোমধ্যে খাঁড়া হয়ে গেছে। রুমের একটিমাত্র দরজা যা আমার ঠিক পা বরাবর, তা বন্ধই আছে। তাহলে এ ছায়াটা রুমে ঢুকল কিভাবে? গা গির গির করে উঠছিলো। এক অশরীরী প্রেতাত্নার ভয়ে কখন যে আমি মনে মনে কুল হুআয়াল্লা সুরা পড়তে শুরু করেছি জানিনা। তবে মানুষের মস্তিষ্ক দ্রুতই ব্যাখ্যাযোগ্য সমাধান চায়। চিন্তা করে চলেছি, রুমের দরজা বন্ধ, রুমমেট সে-তো বাড়ীতে, এখানে আমি ভিন্ন আর কেউ নেই। অতএব এটির কোনো অস্তিত্ব থাকতে পারেনা। কিন্তু না, এটি-তো আছে! তাহলে কেম্‌নে আছে? ঠিক তখুনি সমাধানটা পেলাম। যে মাথাটা এতক্ষণ এতটুকুও নাড়াচ্ছিলাম না, তা সহসাই পুরো পেছন ঘুরিয়ে যা দেখবার দেখে নিলাম। ভাবতেও পারিনি জিনিসটা ঐদিকে থাকবে।

অশরীরী আত্না আর কেউ নয়, সশরীরে চোর মহাশয় দাঁড়িয়ে আছেন ঠিক আমার মাথার পেছন দিকটার জানালার বাইরে ঝুলন্ত ব্যালকুনিতে। এটি একটি পরিত্যক্ত, ক্লোজড ব্যালকুনি। হল নির্মাণের সময় কেন এটি তৈরী করেছিল জানিনা, তবে এখন সেখানে আছে শুধু জানালা তাও আবার শক্ত রড দিয়ে ঘেরা। ঐ ব্যালকুনিতে কেউ যেতে পারেনা, কোনো প্রবেশ পথই নেই। আর আমি থাকতাম দো-তলায়, ব্যালকুনিতে চোরটা কিভাবে ঊঠেছিলো তা আজও আমার কাছে রহস্য রয়ে গেছে। তবে তার দূর্ভাগ্য যে, হলের পরবর্তী যে বিল্ডিংটি যা কিনা ডাইনিং হল নামে পরিচিত, তার বারান্দায় একটি মৃদু লাইট জ্বালানো ছিল; তারই অতি ক্ষীণ আলো চোরটির শরীরে লেগে আমার রুমের ওয়ালে এই অশরীরী ছায়া উৎপাদন করেছে। সে বড়শীর মত লম্বাকৃতির ছড়ি দিয়ে জানালার গরাদের বাইরে থেকেও আমার রুমের ভিতরের তারে টাঙানো দু’টি জামা (যার একটির পকেটে বিশ-বাইশ টাকার মত ছিল), লুঙ্গি ও আমার নতুন ক্রয় করা জাইঙ্গাটি অপর পাশ হইতে ইতিমধ্যেই হস্তগত করিয়াছে। । এমতবস্থায়, যখনি আমি মাথা ঘুরিয়ে তার দিকে তাকালাম, এবং ভয়ে কিছুক্ষণ আগেও মৃতপ্রায় আমি সশব্দে সজোরে ‘কে, কে ওখানে; চোর-চোর’ বলে চিৎকার করে  উঠলাম, তখন আর যায় কোথায়? তবে যায়, আমাকে দ্বিতীয়বার আরেকটি ভয়ংকর উৎকণ্ঠার মধ্যে ফেলে দিয়ে তবে যায়। আমি তাকে শুধু ব্যালকুনি থেকে লাফ দিয়ে আমার দৃষ্টিসীমা হতে তিরোহিত হতে দেখি। বুকটা ধক্‌ করে উঠে। কারণ এ দো-তলা উচ্চতা থেকে নীচে পড়লে যে কেউ অক্কা পেতে পারে, তাছাড়া ওপাশটার নীচের অবস্থা খুবই খারাপ। মানুষজনের কোনো চলাচল নেই, আবর্জনাপূর্ণ, আর সর্বপরি আছে হলের প্রধান ড্রেনটি, যার ভিতর পড়লে চোরটির মারা যাবার সম্ভাবনাই বেশী। একটা সাংঘাতিক অপরাধবোধ জেগে উঠল। হোক না চোর, সামান্য কিছু চুরি করে হয়তঃ বউ পোলাপান নিয়ে একটু সুখী হতে চাইছে। তাই একই সাথে আতংকিত ও উৎকণ্ঠিত হয়ে তাড়তাড়ি জানালের কাছে দাঁড়াই নীচে কি অবস্থা দেখার জন্য। বুকটা সত্যি ধক্‌ ধক্‌ করছিলো, যদি দেখি তার রক্তাক্ত লাশ পড়ে আছে নীচে। কি ভয়ংকর অনুভতি হচ্ছিল তখন বুঝানো মুশকিল!


তবে আমার অবাক হবার পালা। একনজর দেখলাম শক্ত-সামর্থ সুঠাম দেহটি আমার উৎকণ্ঠাকে থোড়াই কেয়ার করে কি সাবলীল অ্যাথ্‌লেটিকদের মত চমৎকার দৌঁড়ে চলে যাচ্ছে। হাতে কিন্তু তখনও আমার কাপড়-চোপড়গুলো ঠিক ধরে রেখেছে (পরে বাচ্চু হলে ফিরলে জেনেছিলাম তারও দুয়েকটি জামা-কাপড় একই সময় চুরি গিয়েছিল)। ততক্ষণে আমার চিৎকারে আশেপাশের রুমের দু’একজন জেগে উঠেছে। সেদিকে অপেক্ষা না করে দ্রুতই রুমের দরজা খুলে সিঁড়ি বের হয়ে নিচে নেমে গেলাম হলের দারোয়ানের উদ্দেশ্যে। আমি তার নিকট পৌঁছুবার পর সেও খানিকটা চেঁচামেচি করল। আমি তাকে চোরটাকে ধাওয়া করতে বল্‌লাম।  সে একটুখানি এগিয়ে চোরটির প্রস্থানপথের দিকে তাকিয়ে আমাকে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় জানালো-“চোরাইয়া কি আর আছেনা, ইবা এতক্কনত্‌ জোবরা গেরামে হান্দাই গিইয়েদে”। (অর্থাৎ চোর কি আর আছে নাকি, সে এতক্ষণে জোবরা গ্রামে ঢুকে গিয়েছে)। জোবরা গ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে অবস্থিত একটি অনগ্রসর ঘনবসতিপূর্ণ গ্রাম, ঐখান থেকে চোরকে খুঁজে বের করা আর্মির টিম দিয়েও হবেনা। ডঃ ইউনুস এ গ্রামটির কথা মাঝে মাঝে তাঁর বক্তৃতায় বলে থাকেন, ৭৪ এর দূর্ভিক্ষে এ গ্রামের মানুষগুলোর জীবন পর্যবেক্ষণ করেছিলেন, যখন তিনি ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে অধ্যাপনা করতেন।

জানালার গরাদে চোরটা শুধু তার ঐ বড়শীর ছিপিটা আমার জন্য রেখে গেছে। ঐটাকে বাইরে ফেলে দিয়ে জানালাটা বন্ধ করে দিলাম, যদিও জানি আজ রাতে আর সে আসছে না। যাহোক, রাতে আর ঘুম হলনা। ভাবলাম সকালে ডিম-পরোটা দিয়ে জয়নাল মিয়ার দোকানের নাস্তা খেয়ে তবেই ঘুমাব। তার দোকানে হলের কয়েকজন সাধারণ ছাত্রের কাছ থেকে কিছু তথ্য পেলাম। তারা বলল এ চোরটি আরও কয়েকটি রুমে এভাবে চুরি করেছে। অনেক ছাত্রদের রুমে টাকা-পয়সা, চা’য়ের ফ্লাস্ক, জামা-কাপড় ইত্যাদি চুরি যাচ্ছে। হল প্রশাসন তাকে ধরছে না। আরো জানাল, হল-দারোয়ান এর সাথে এর আঁতাত আছে। আবার হল দারোয়ানের সাথেও একগোষ্ঠী আছে যারা এসবের ভাগ-ভাটোয়ারা পায়। বুঝলাম -আরও আছে যে চোর!

Thursday, January 12, 2012

একটি কৌতুক


একটি কৌতুকঃ

(কৌতুকটি ১৪/১৫ বৎসর আগে বিটিভি’র একটি ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানে শুনেছিলাম। উপস্থাপক আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদের মুখে বলা। কৌতুকের ভাষাটুকু হুবহু মনে নেই, তবে বিষয়বস্তু স্মরণ করতে পারছি। সে স্মৃতি থেকে ভেতরের বর্ণনাটুকু সাজিয়েছি।)

দু'বন্ধু সিনেমা দেখতে গেছে প্রেক্ষাগৃহে। অন্ধকার সিনেমা হল। ছবি শুরু হতেই সিনেমার পর্দার আলো এসে পড়ল। তাতে প্রথম বন্ধু দেখতে পেল তাদের ঠিক সামনের সারির সিটে যে ভদ্রলোকটি বসে আছেন তার মাথায় প্রকান্ড একটি টাক, একটু তৈলও লাগিয়েছেন মনে হচ্ছে, পর্দার তীক্ষ্ম আলো পড়লে চিকচক করে উঠ্‌ছে। প্রথম বন্ধুর মাথায় দুষ্ট বুদ্ধি চাপল। পাশে বসা দ্বিতীয় বন্ধুকে সামনের সারির টাক-টিকে দেখিয়ে বলল, যদি তুই ওর মাথায় একটা চাপড় দিতে পারিস আর উল্টো-মার না খাস, তবে পাবি দুশত টাকা। কিন্তু সে যদি তোকে পাল্টা-মার বসিয়ে দেয়, তবে তুই আমাকে দিবি দু’শ টাকা। কেমন? এ বাজিতে রাজি?

২য় বন্ধু সাথে সাথেই বলল, আমি রাজি!

১ম বন্ধুঃ আবারো বলছি, ভালো করে ভেবে দেখ। বাজির শর্ত কিন্তু ওই ব্যাটার চাঁদিতে একটা চাপড় দিতে হবে, তাতেই কিন্তু শেষ না, তার কাছ থেকে পাল্টা মার খাওয়া যাবেনা; যদি মার খাস তাহলে বাজিতে তোর হার, আমাকে দিতে হবে ২০০ টাকা, আর যদি পাল্টা মার না খাস তবেই বাজিতে তোর জিত, আমার কাছ থেকে জিতবি ২০০ টাকা। এখন ভেবে দেখ এ বাজিতে রাজী আছিস কিনা? (মনে মনে ভাবল- তার বন্ধুটি এ বাজিতে নির্ঘাৎ হারবে)।

২য় বন্ধুঃ রাজী মানে পুরোই রাজী। যেই ভাবনা সেই কাজ। এই শুরু করলাম বলেই সামনের সারিতে বসা লোকটার চাঁদিতে ঠাস করে প্রকান্ড একটা চাপড় বসিয়ে দিল, সাথে সাথেই বলে উঠলো, আরে আব্দুল্লাহ ভাই যে, কতদিন পর তোমার সাথে দেখা, আরে তুমি আর আমি যে একই হলে বইস্যা সিনেমা দেখ্‌তাছি!

টেকো দর্শকঃ হতচকিত হয়ে ঘাড় ফিরিয়ে বলে উঠলো, আরে করছেন কি? কে আপনার আব্দুল্লাহ ভাই? আমি আব্দুল্লাহ ভাই না। আপনি ভূল করছেন!

২য় বন্ধুঃ বলেন কি! এতোদিনের পরিচিত আব্দুল্লাহ ভাইকে চিন্‌তে তো ভূল হবার কথা নয় আপনার চেহারা তো অবিকল আব্দুল্লাহ ভাই'র মত।

টেকো দর্শকঃ বলেছি-তো, আমি আব্দুল্লাহ ভাই না। আপনি ভূল করছেন!

২য় বন্ধুঃ তাই নাকি? সত্যিই অবাক ব্যাপার! চেহারার এত মিল! যা'হোক ভাই, সরি, আপনাকে আব্দুল্লাহ ভাই ভেবে ভূল করে চাপড় মেরে দিয়েছি।

টেকো দর্শকঃ আচ্ছা ঠিক আছে, কি আর করা?

এখন ২য় বন্ধুটি ১ম বন্ধুকে পাশ ফিরে বললো, দে আমাকে ২০০ টাকা দে। বাজিতে আমি জিতেছি, চাপড় দিয়ে তাকে ম্যানেজ করতে পেরেছি, পাল্টা-মার খাইনি।

১ম বন্ধুকে বাজিতে হেরে বিরস বদনে টাকাটা দিয়ে দিতে হল।

 অনেকক্ষণ পর আবারো ১ম বন্ধুটি ২য় জনকে বললো, এবার যদি তুই তাকে আরও একটা চাপড় দিতে পারিস আর পাল্টা-মার না খাস -তাহলে পাঁচশ টাকা বাজি। আর পাল্টা-মার খেলে আমাকে দিতে হবে পাঁচশ টাকা। কি, ঠিক আছে? ( মনে মনে ধরে নিল, এবার তার বন্ধুটি পাল্টা মার না খেয়েই যায় না)

২য় বন্ধুঃ ঠিক আছে। যেই কথা সেই কাজ! চটাস করে তৎক্ষণাৎ টেকোটির মাথায় একটা চাপড় বসিয়ে দিয়ে বলতে লাগল, আরে আব্দুল্লাহ ভাই! তুমি আমার সাথে রঙ্গ করতাছো, ভাব্‌ছো পরিচয় না দিলে আমি তোমারে চিন্‌তাম না !  আমি কিন্তু তোমারে ঠিকই চিন্‌ছি, কতদিনের চেনাজানা মানুষ, পরিচয় গোপন কইর‍্যা তামাশা ,কর্‌তাছো। তুমি-ই তো আব্দুল্লাহ ভাই, হে হে, কও কি খবর-টবর তোমার?

টাকওয়ালা দর্শকঃ  ভয়ানক ক্ষেপে গিয়ে উঠে দাঁড়ালেন, কে আপনার আব্দুল্লাহ ভাই? কি শুরু করেছেন আপনি? পয়সা খরচ করে সিনেমা দেখ্‌তে এসেছি, আর আপনি আমাকে কোথাকার আব্দুল্লাহ ভাই মনে করে একটার পর একটা চাপড় মেরে চলেছেন? হচ্ছেটা কি?

২য় বন্ধুঃ  আপনি কি বলতে চাইছেন আপনি আব্দুল্লাহ ভাই না? মানুষের চেহারা অবিকল এক হয় কি করে?

টেকো দর্শকঃ  বলেছি তো আমি আব্দুল্লাহ ভাই না, আপনি কেন বারবার ভূল করছেন?

২য় বন্ধুঃ  সরি, ভাই, ভেরি সরি, অবিকল একই চেহারার মানুষ যে থাকতে পারে, এমন পরিস্থিতিতে কখনো পড়ি নাই। আপনি দেখতে অবিকল আব্দুল্লাহ ভাইয়ের মত। প্লিজ ডোন্ট মাইন্ড!

টেকো দর্শকঃ  অগ্যতা রাগ দমন হয়ে বসে নিজের সীটে বসে পড়লেন। ভাবলেন হয়তঃ তার চেহারার সাথে ঐ আব্দুল্লাহ ভাই নামক ব্যাক্তিটির কাকতলীয় মিলের কারণে এই গাধাটা বারবার ভূল করছে।

এবারও ২য় বন্ধুটি মার না খেয়ে বাজিতে জিতে গেল। ১ম বন্ধুকে দিতে হল আরও ৫শ টাকা। সে তো ভীষণ বেজার। কোনভাবেই যে ২য় বন্ধুটি মার খাচ্ছেনা, আর সে হেরেই চলেছে!

এদিকে সিনেমা শেষ। দু'বন্ধু সিঁড়ি দিয়ে দর্শকের ভীঁড়ের সাথে নেমে যাচ্ছে। এসময় দেখ্‌তে পেল তাদের ঠিক সামনের সিঁড়ি দিয়ে ঐ টেকো-টাও নামছে। 

১ম বন্ধুটি বললঃ এবার যদি তারে চাপড় মারতে পারিস আর উল্টো-মার না খেয়েছিস- তবে বাজি রইলো ১০০০ টাকার (১ম বন্ধুটির বদ্ধমূল ধারণা- এবার তার বন্ধুটি কোনমতেই ম্যানেজ করতে পারবে না, পাল্টা-মার খাবেই খাবে। আর তাই বাজিতে জিতে গেলে যা এ পর্যন্ত হারিয়েছি তারচেয়েও বেশি ফেরত আসবে। তাই ১০০০ টাকা বাজি।)

২য় বন্ধুঃ সাথে সাথেই রাজি। যেই কথা সেই কাজ। পটাশ করে বসিয়ে দিল একখানা চাপড় টেকো-টির চাঁদিতে। আর সাথে সাথেই একগাল হাসি নিয়ে বলতে থাকল, আরে আব্দুল্লাহ ভাই, তুমি এইখানে? অথচ হয়েছে কি জানো, সিনেমা হলের ভেতর এক ভদ্রলোককে তুমি ভেবে আমি তার চাঁদিতে দু-দু'টা চাপড় মেরে দিয়েছি। ভদ্রলোকের চেহারা দেখ্‌তে অবিকল তোমার মত। দেখো তো কি কান্ড! অথচ তুমি যে এইখানে!

টেকো লোকটি স্তম্ভিত হয়ে তার দিকে তাকিয়ে থাকলো। এরকম একটি বিব্রতকর পরিস্থিতির আশু প্রতিকার কিভাবে সম্ভব তা আর ভাবতে না পেরে কার্যতঃ সে নির্বাক হয়ে গেল।

এবারও ১ম বন্ধুটির আশা পূরণ হল না। ২য় বন্ধুটি জিতে নিল আরো ১০০০ টাকা !!!