WELCOME TO AZMIR'S BLOG

Thank you for visiting my Blog! If you have any comments or suggestions relating to the posts or contents of this Blog, you are most welcome to do so by using 'post a comment' section below every post. You can also simply rate a post by clicking either 'funny', 'interesting' or 'cool' box. Personally I believe in 'the Hegelian Dialectic', and I strongly advocate for free speech and open discussion. Here I am trying to have a meaningful and productive dialogue with you. Your every piece of advice helps me to improve the Blog!
Cheers Azmir !

Thursday, January 12, 2012

একটি কৌতুক


একটি কৌতুকঃ

(কৌতুকটি ১৪/১৫ বৎসর আগে বিটিভি’র একটি ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানে শুনেছিলাম। উপস্থাপক আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদের মুখে বলা। কৌতুকের ভাষাটুকু হুবহু মনে নেই, তবে বিষয়বস্তু স্মরণ করতে পারছি। সে স্মৃতি থেকে ভেতরের বর্ণনাটুকু সাজিয়েছি।)

দু'বন্ধু সিনেমা দেখতে গেছে প্রেক্ষাগৃহে। অন্ধকার সিনেমা হল। ছবি শুরু হতেই সিনেমার পর্দার আলো এসে পড়ল। তাতে প্রথম বন্ধু দেখতে পেল তাদের ঠিক সামনের সারির সিটে যে ভদ্রলোকটি বসে আছেন তার মাথায় প্রকান্ড একটি টাক, একটু তৈলও লাগিয়েছেন মনে হচ্ছে, পর্দার তীক্ষ্ম আলো পড়লে চিকচক করে উঠ্‌ছে। প্রথম বন্ধুর মাথায় দুষ্ট বুদ্ধি চাপল। পাশে বসা দ্বিতীয় বন্ধুকে সামনের সারির টাক-টিকে দেখিয়ে বলল, যদি তুই ওর মাথায় একটা চাপড় দিতে পারিস আর উল্টো-মার না খাস, তবে পাবি দুশত টাকা। কিন্তু সে যদি তোকে পাল্টা-মার বসিয়ে দেয়, তবে তুই আমাকে দিবি দু’শ টাকা। কেমন? এ বাজিতে রাজি?

২য় বন্ধু সাথে সাথেই বলল, আমি রাজি!

১ম বন্ধুঃ আবারো বলছি, ভালো করে ভেবে দেখ। বাজির শর্ত কিন্তু ওই ব্যাটার চাঁদিতে একটা চাপড় দিতে হবে, তাতেই কিন্তু শেষ না, তার কাছ থেকে পাল্টা মার খাওয়া যাবেনা; যদি মার খাস তাহলে বাজিতে তোর হার, আমাকে দিতে হবে ২০০ টাকা, আর যদি পাল্টা মার না খাস তবেই বাজিতে তোর জিত, আমার কাছ থেকে জিতবি ২০০ টাকা। এখন ভেবে দেখ এ বাজিতে রাজী আছিস কিনা? (মনে মনে ভাবল- তার বন্ধুটি এ বাজিতে নির্ঘাৎ হারবে)।

২য় বন্ধুঃ রাজী মানে পুরোই রাজী। যেই ভাবনা সেই কাজ। এই শুরু করলাম বলেই সামনের সারিতে বসা লোকটার চাঁদিতে ঠাস করে প্রকান্ড একটা চাপড় বসিয়ে দিল, সাথে সাথেই বলে উঠলো, আরে আব্দুল্লাহ ভাই যে, কতদিন পর তোমার সাথে দেখা, আরে তুমি আর আমি যে একই হলে বইস্যা সিনেমা দেখ্‌তাছি!

টেকো দর্শকঃ হতচকিত হয়ে ঘাড় ফিরিয়ে বলে উঠলো, আরে করছেন কি? কে আপনার আব্দুল্লাহ ভাই? আমি আব্দুল্লাহ ভাই না। আপনি ভূল করছেন!

২য় বন্ধুঃ বলেন কি! এতোদিনের পরিচিত আব্দুল্লাহ ভাইকে চিন্‌তে তো ভূল হবার কথা নয় আপনার চেহারা তো অবিকল আব্দুল্লাহ ভাই'র মত।

টেকো দর্শকঃ বলেছি-তো, আমি আব্দুল্লাহ ভাই না। আপনি ভূল করছেন!

২য় বন্ধুঃ তাই নাকি? সত্যিই অবাক ব্যাপার! চেহারার এত মিল! যা'হোক ভাই, সরি, আপনাকে আব্দুল্লাহ ভাই ভেবে ভূল করে চাপড় মেরে দিয়েছি।

টেকো দর্শকঃ আচ্ছা ঠিক আছে, কি আর করা?

এখন ২য় বন্ধুটি ১ম বন্ধুকে পাশ ফিরে বললো, দে আমাকে ২০০ টাকা দে। বাজিতে আমি জিতেছি, চাপড় দিয়ে তাকে ম্যানেজ করতে পেরেছি, পাল্টা-মার খাইনি।

১ম বন্ধুকে বাজিতে হেরে বিরস বদনে টাকাটা দিয়ে দিতে হল।

 অনেকক্ষণ পর আবারো ১ম বন্ধুটি ২য় জনকে বললো, এবার যদি তুই তাকে আরও একটা চাপড় দিতে পারিস আর পাল্টা-মার না খাস -তাহলে পাঁচশ টাকা বাজি। আর পাল্টা-মার খেলে আমাকে দিতে হবে পাঁচশ টাকা। কি, ঠিক আছে? ( মনে মনে ধরে নিল, এবার তার বন্ধুটি পাল্টা মার না খেয়েই যায় না)

২য় বন্ধুঃ ঠিক আছে। যেই কথা সেই কাজ! চটাস করে তৎক্ষণাৎ টেকোটির মাথায় একটা চাপড় বসিয়ে দিয়ে বলতে লাগল, আরে আব্দুল্লাহ ভাই! তুমি আমার সাথে রঙ্গ করতাছো, ভাব্‌ছো পরিচয় না দিলে আমি তোমারে চিন্‌তাম না !  আমি কিন্তু তোমারে ঠিকই চিন্‌ছি, কতদিনের চেনাজানা মানুষ, পরিচয় গোপন কইর‍্যা তামাশা ,কর্‌তাছো। তুমি-ই তো আব্দুল্লাহ ভাই, হে হে, কও কি খবর-টবর তোমার?

টাকওয়ালা দর্শকঃ  ভয়ানক ক্ষেপে গিয়ে উঠে দাঁড়ালেন, কে আপনার আব্দুল্লাহ ভাই? কি শুরু করেছেন আপনি? পয়সা খরচ করে সিনেমা দেখ্‌তে এসেছি, আর আপনি আমাকে কোথাকার আব্দুল্লাহ ভাই মনে করে একটার পর একটা চাপড় মেরে চলেছেন? হচ্ছেটা কি?

২য় বন্ধুঃ  আপনি কি বলতে চাইছেন আপনি আব্দুল্লাহ ভাই না? মানুষের চেহারা অবিকল এক হয় কি করে?

টেকো দর্শকঃ  বলেছি তো আমি আব্দুল্লাহ ভাই না, আপনি কেন বারবার ভূল করছেন?

২য় বন্ধুঃ  সরি, ভাই, ভেরি সরি, অবিকল একই চেহারার মানুষ যে থাকতে পারে, এমন পরিস্থিতিতে কখনো পড়ি নাই। আপনি দেখতে অবিকল আব্দুল্লাহ ভাইয়ের মত। প্লিজ ডোন্ট মাইন্ড!

টেকো দর্শকঃ  অগ্যতা রাগ দমন হয়ে বসে নিজের সীটে বসে পড়লেন। ভাবলেন হয়তঃ তার চেহারার সাথে ঐ আব্দুল্লাহ ভাই নামক ব্যাক্তিটির কাকতলীয় মিলের কারণে এই গাধাটা বারবার ভূল করছে।

এবারও ২য় বন্ধুটি মার না খেয়ে বাজিতে জিতে গেল। ১ম বন্ধুকে দিতে হল আরও ৫শ টাকা। সে তো ভীষণ বেজার। কোনভাবেই যে ২য় বন্ধুটি মার খাচ্ছেনা, আর সে হেরেই চলেছে!

এদিকে সিনেমা শেষ। দু'বন্ধু সিঁড়ি দিয়ে দর্শকের ভীঁড়ের সাথে নেমে যাচ্ছে। এসময় দেখ্‌তে পেল তাদের ঠিক সামনের সিঁড়ি দিয়ে ঐ টেকো-টাও নামছে। 

১ম বন্ধুটি বললঃ এবার যদি তারে চাপড় মারতে পারিস আর উল্টো-মার না খেয়েছিস- তবে বাজি রইলো ১০০০ টাকার (১ম বন্ধুটির বদ্ধমূল ধারণা- এবার তার বন্ধুটি কোনমতেই ম্যানেজ করতে পারবে না, পাল্টা-মার খাবেই খাবে। আর তাই বাজিতে জিতে গেলে যা এ পর্যন্ত হারিয়েছি তারচেয়েও বেশি ফেরত আসবে। তাই ১০০০ টাকা বাজি।)

২য় বন্ধুঃ সাথে সাথেই রাজি। যেই কথা সেই কাজ। পটাশ করে বসিয়ে দিল একখানা চাপড় টেকো-টির চাঁদিতে। আর সাথে সাথেই একগাল হাসি নিয়ে বলতে থাকল, আরে আব্দুল্লাহ ভাই, তুমি এইখানে? অথচ হয়েছে কি জানো, সিনেমা হলের ভেতর এক ভদ্রলোককে তুমি ভেবে আমি তার চাঁদিতে দু-দু'টা চাপড় মেরে দিয়েছি। ভদ্রলোকের চেহারা দেখ্‌তে অবিকল তোমার মত। দেখো তো কি কান্ড! অথচ তুমি যে এইখানে!

টেকো লোকটি স্তম্ভিত হয়ে তার দিকে তাকিয়ে থাকলো। এরকম একটি বিব্রতকর পরিস্থিতির আশু প্রতিকার কিভাবে সম্ভব তা আর ভাবতে না পেরে কার্যতঃ সে নির্বাক হয়ে গেল।

এবারও ১ম বন্ধুটির আশা পূরণ হল না। ২য় বন্ধুটি জিতে নিল আরো ১০০০ টাকা !!!