WELCOME TO AZMIR'S BLOG

Thank you for visiting my Blog! If you have any comments or suggestions relating to the posts or contents of this Blog, you are most welcome to do so by using 'post a comment' section below every post. You can also simply rate a post by clicking either 'funny', 'interesting' or 'cool' box. Personally I believe in 'the Hegelian Dialectic', and I strongly advocate for free speech and open discussion. Here I am trying to have a meaningful and productive dialogue with you. Your every piece of advice helps me to improve the Blog!
Cheers Azmir !

Monday, April 29, 2013

:: আমি কখনো সেলস্‌ম্যান হতে পারিনি ::


জানো আমি কখনো ভাল বিক্রেতা ছিলাম না
মুখে একখানা ভালো হাসি লটকে রাখতে
শিখিনি বলে সেলস্‌ম্যানের চাকরীটাও কপালে জুটেনি।
অথচ দেখ, হাসির যে কি গুণ তা নিয়ে কতকিছু যে পড়েছি,
নিজ হৃদপিণ্ডের পাম্পিং ক্ষমতা বৃদ্ধি ছাড়াও এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব
অন্যের দেহমনেও কিভাবে সাঁই করে ছড়িয়ে দেয়,
আর তাতেই না কি দারূণ জমে উঠে জগতের বেচাকেনা।
নেচে উঠে ক্যাশবক্স কচ কচ 
আমি এসব মোটেও অস্বীকার করিনা। 

আমি বরং দেখেছি জগতে সবাই হাসতে শিখছে,
তবলার বিটে নৃত্যশিল্পীর পায়ের ঘুঙুর হাসে,
সূয্যিটা সকালে নির্লজ্জ একগাল হেসে উঠবেই,
পাখিরা কিচ্‌ করে হাসে, ফোক্‌লা দাঁতে খুকুমনি ফিক্‌ করে
বান্ধবীরা কথায় কথায় খিক্‌ করে,
এখন দেখি আবার ফেসবুকে মানুষ হাসে ক্লিক করে।
সবই দেখেছি আর ক্রমাগত হাসতে শিখেছি তাদের কাছ থেকে।

আমি আমার সময়ের অনেক হোমরা চোমরাকেও
দেখেছি হাসতে মাইক বাজিয়ে,
হাসছে প্রাণপণে, প্রাণহীনতায়।
কুকুরে মুখে হাসতে পারেনা বলে সেও হাল ছেড়ে দেয়নি,
মোক্ষম শিখে নিয়েছে কিভাবে হাসতে হয় লেজ দিয়ে ।

অথচ আমার আজও সেল্‌সম্যানের কাজটা জোটেনি,
তবে যেদিন তুমি আমার সামনে এসে দাঁড়ালে
আমার হাসি সেদিনও তোমাকে দেখাতে পারিনি।
তবে কি জানো,
মুখ ঝরে সেদিন হাসিটা নীচে না পড়লেও
কন্ঠনালী বেয়ে সেটি উঠে গিয়ে
ঠিক ঠিক পৌঁছে গেল আমার মস্তিস্কের নিউরণে,
সেখানে এক স্নিগ্ধ বিষ্ফোরণ ঘটিয়ে
কিসের যেন আগুন লাগিয়ে দিল
সেই থেকে আমি আর সেল্‌সম্যানের চাকরী খুঁজিনা।

 

আজমীর হোসেন
নাইটক্লিফ, ডারউইন, অষ্ট্রেলিয়া
২৮.০৪.২০১৩

 


এটি কোনো গল্প নয়!

না, এটি কোনো গল্প নয়। ছোট একটি অভিজ্ঞতা। কার কি কাজে লাগবে তা জানিনা। তবে মন চাইল তাই লিখছি। গত সপ্তাহের কথা। সকালের দুটো ক্লাশ শেষ করে ৩০ মিনিট কফি ব্রেক। স্টাফ রুমের বাইরে ছোট্ট একটি বারান্দা। কফি টাইমে এ জায়গাটা চমৎকার। আশেপাশে নানান জাতের গাছ-গাছালি। বাতাস এলে নাচে। এ কলেজের বাগানটি বেশ বড়। আমি এ কলেজে পার্ট-টাইম আসি। দেখি গার্ডেনার (মানে সোজা বাংলায় যাকে বলি মালি), সেও আজ হঠাৎ এসে আমার সাথে কফিতে যোগ দিল।

হ্যালো জেইম্‌স, কেমন আছো? তাকে বেশ ক্লান্তই দেখাচ্ছিল। হাতে-পায়ে ধুলো। একটু আগেও তাকে কতগুলো ইট-সুরকি-আগাছা ইত্যাদি শাবল দিয়ে ট্রাকে তুলতে দেখেছি। পুরো প্রতিষ্ঠানের সবগুলো গাছের যত্ন সেই-ই করে। তার কাজ ও জীবনের অনেক কথাই কথায় কথায় জানালো। সে একজন লাইসেন্সধারী ট্রেইন্‌ড গার্ডেনার। এ প্রতিষ্ঠানে পার্ট-টাইম করে, এছাড়া আরও দুটি বিদ্যালয়েও একই কাজ করে। একটি মাত্র ছেলে। এখাঙ্কার একটি স্কুলে যায়। প্রতিদিন কাজ শেষে সে ছেলেকে স্কুল থেকে ড্রাইভ করে বাড়ীতে নিয়ে যায়। কারণ তার স্ত্রী সাংঘাতিক ব্যস্ত মহিলা। ফুল-টাইম কাজ করে বিধায় সময় দিতে পারেনা, সে বাড়ী ফেরে আরও দেরী করে। আরও বুঝলাম তারা বেশ সুখী পরিবার। তার শুধু একটাই আক্ষেপ, গত বছর কাজ করতে গিয়ে হাটুতে বড় ধরনের একটা ইনজুরি খেয়েছিল, অপারেশান করে ভালো হলেও পুরোপুরি যুকিমুক্ত নয়। দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল, ‘কিছু কিছু রিস্কি কাজ করার লাইসেন্স হারিয়েছি।'

 'তা তোমার ওয়াইফ কোথায় কাজ করে? সে বলল, ‘এখানে, এ কলেজেই আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, তাই নাকি? কই জানতাম নাতো, তা তুমি কোন টিচারের কথা বলছ? আমি তো এখানে সবাইকেই চিনি।

 সে তার স্ত্রীর নাম হিসেবে একটি নামের উল্লেখ করল।

 কফিটা গলায় বোধ হয় মূহূর্তের জন্য একটু আটকে গিয়েছিল নামটা শুনে একটু কি ভিমরি খেয়েছিলাম? ঢোক গিলে আবার জিজ্ঞেস করলাম, কি নাম বললে? (মনে মনে হয়তঃ ভাবছিলাম, ব্যাটা ফাজলামো করছিস্‌ নাতো)?

সে আবার একই নামটাই আমাকে জানালো!!

 না আমি আর তৃতীয়বার তার ওয়াইফের নাম জিজ্ঞেস করিনি। ততক্ষণে আমার অনুসন্ধানী চোখ চলে গেছে তার শার্টের বামদিকে লাগানো ন্যাম-ব্যাজটির উপর।

কেন জানি পল্লীকবি জসিম উদ্দিনের কথা মনে পড়ে গেল। বিলেতে যে হোটেল-বয়ের বাড়ীতে নিমন্ত্রণ খেতে গিয়ে উপহার হিসেবে সস্তা পাউরুটি কিনেছিলেন। কিন্তু আমার হাতে তো এখানে কোনো পাউরুটি নেই! তবে কি মনের কোণে অজান্তে পাউরুটি জাতীয় কোনো অনুভূতি কি লুকানো ছিল? তা নাহলে আমি তার স্ত্রীর নাম দ্বিতীয়বার জিজ্ঞেস করেছিলাম কেন?

 মালির ন্যাম-ব্যাজটিতে ফ্যামিলি নামের অংশ হিসাবে যার নামটি লেখা আছে সেটি এ কলেজের প্রিন্সিপ্যাল ম্যাডামের।

 
আজমীর হোসেন
নাইটক্লিফ, ডারউইন, অষ্ট্রেলিয়া
১১.১১.১২